এবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত ও কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মোকাররম সরদারকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। রোববার (২৭ অক্টোবর) দিবাগত রাত আড়াইটায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার আলীগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফুল ইসলাম। তিনি বলেন, গভীর রাতে মোকাররমকে সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করে ফতুল্লা থানায় সোপর্দ করেছে। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
এর আগে ২ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় চাঁদা দাবি ও মারধরের ঘটনায় সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ ও মোকাররমসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়। এ মামলায় আরও পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে শাহ আলম নামের এক ব্যবসায়ী বাদী হয়ে মামলার আবেদন করলে আদালতের নির্দেশে ফতুল্লা থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একসময় মাত্র ৮০ টাকা রোজে লোড-আনলোডের কাজ করতেন মোকারম সরদার। বুড়িগঙ্গায় জাহাজ থেকে লোড-আনলোডের সময় চুরি করে রাখা চাল, ডাল, গম, পাথর, কয়লা, সার বিক্রি করতেন তিনি। তার রয়েছে জাহাজের পণ্য চোরাইয়ের সিন্ডিকেট। সেই সিন্ডিকেট থেকে মোকারম সরদার যে পরিমাণের টাকা আয় করতেন তার অর্ধেক স্থানীয় নেতাদের ভাগ দিতেন। পরে শ্রমিক লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে নেতা বনে যান মোকাররম। রাজনীতি করেই এখন কয়েক শ’ কোটি টাকার মালিক তিনি। সাবেক ডিবিপ্রধান হারুনের ছত্রছায়ায় নানা অপকর্ম করতেন তিনি।
মূলত হারুনের অবৈধ সম্পদের কেয়ারটেকার ছিলেন মোকাররম। কেয়ারটেকার মোকারম সরদারকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে বিপুল পরিমাণ টাকা ছিটিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানও নির্বাচিত করান হারুন। ন্যূনতম যোগ্যতা না থাকার পরেও মোকাররমকে চেয়ারম্যান বানানো হয় শুধু হারুনের অবৈধ সম্পদ পাহারা দেয়ার জন্য।
আলীগঞ্জের স্থানীয়রা জানান, নারায়ণগঞ্জে পুলিশ সুপার থাকাকালে আলীগঞ্জ এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে মোকাররম সরদারের লেবার অফিসে হারুন অর রশিদের আনাগোনা ছিল প্রতিনিয়ত। ব্যবসায়িক নানা হিসেবের পাশাপাশি এই অফিসটি টর্চার সেল হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে সেসময়।